‘প্রণাম করতে হ’লে পরেই শ্রদ্ধা চাই’
‘শ্রদ্ধা না হ’লে প্রণাম ক’রে লাভ নেই। কিন্তু তাহ’লেও প্রণাম করা ভাল।’
শ্রীশ্রীঠাকুর– প্রণাম করতে হ’লে পরেই শ্রদ্ধা চাই। শ্রদ্ধা আনে সেই প্রণম্যের স্বভাব ও গুণের চিন্তন। এইভাবে হয় তাঁর স্মরণ। তাঁকে স্মরণ ক’রে প্রণাম কর,মানে তাঁর attribute (গুণ)-গুলি চিন্তা কর। আমরা প্রণত হই মানে প্রকৃষ্টভাবে নত হই। এই প্রকৃষ্টভাবে নত হ’য়ে চলার মধ্যে-দিয়ে আমরা শ্রেয়ের স্বভাব ও গুণের অধিকারী হই। তাঁর বোধি আমাদের মধ্যে সঞ্চারিত হই। আর,প্রয়োজনমত ক্ষেত্রবিশেষে তা’ বিনিয়োগ ক’রে আমরা অনেক আপদ থেকে রেহাই পাই। শুধু যদি ‘জয় মা কালী’ বা ‘জয় হরি’ বলি,তাতে গুণচিন্তন আসে না,বোধি আসে না। আসা চাই বোধি। সেইজন্য শ্রদ্ধা না হ’লে প্রণাম ক’রে লাভ নেই। কিন্তু তাহ’লেও প্রণাম করা ভাল।
‘আমি তোমার’ এই বোধ নিয়ে প্রণাম করতে হয়। এর থেকে এক মিটারও যদি পার্থক্য হয় তাহ’লে সে আমি আর ঐ প্র-নত আমি না। এ আমি physiological adjustment-এরও (শারীর সঙ্গতির)-ও আমি, spirit-এরও (আত্মিক গতিরও) আমি। মানে,আমার system- এর (বিধানের) সবটা নিয়ে যে আমিত্ব ফুটে উঠেছে সেই আমিই যেন থাকে ‘আমি তোমার’ এর মধ্যে, অহম্ মানে আমি হই। হওয়া আছি নাকি ওর মধ্যে? দেখেন তো!
চুনীদা অভিধান দেখে বললেন– অহম্ হ’চ্ছে অস্মদ্ থেকে। অস্মদ্-এর অস্-ধাতু মানে হওয়া,তারপর কর্ত্তরি মদ্। তাহলে অস্মদ্ মানে হ’ল ‘যে হয়’।
সবটা শুনে শ্রীশ্রীঠাকুর শ্রীমুখখানি খুশীতে ঝলমল ক’রে উঠল,বললেন– ‘ঠিক আছে’। তারপর বললেন অহং ব্যাপ্ত হ’তে পারে,added (বর্দ্ধিত) হ’তে পারে,কিন্তু প্রবৃত্তির গন্ডীতে থাকলে ছোট হ’য়ে যায়।
১লা আশ্বিন,সোমবার,১৩৬৩ (ইং ১৭/৯/১৯৫৬)
দীপরক্ষী ২য় খণ্ড
Read More On IstoKathan:
কিভাবে কথা বলতে হয়’ -উত্তরে শ্রীঠাকুর
সক্রেটিসের ফর্ম্মুল’ নিয়ে আলোচনা- বড়দা ও শ্রীশ্রীঠাকুর
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা সম্পর্কে পরামদয়াল শ্রীশ্রীঠাকুরের কতিপয় উক্তি