By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept
IstoKathan- ইষ্টকথনIstoKathan- ইষ্টকথনIstoKathan- ইষ্টকথন
  • Home
  • Our Blog
  • Contact For Blogging
  • About Our Blogs
  • Category
Search
  • Advertise
© 2023 ISTOKATAHN Social Network. All Rights Reserved.
Reading: শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রা ‘র পূর্বাপর- দীপক কুমার দত্ত
Share
Sign In
Notification Show More
Aa
IstoKathan- ইষ্টকথনIstoKathan- ইষ্টকথন
Aa
  • সুন্দর ব্যবহার
  • ধর্ম ও মানবতা
  • বইসমুহ
  • নিষ্ঠা ও আদর্শ
  • পরিবার ও সমাজ গঠন
  • ধর্ম ও মানবতা
  • Home
  • Our Blog
  • Contact For Blogging
  • About Our Blogs
  • Category
Have an existing account? Sign In
Follow US
  • Advertise
© 2023 ISTOKATHAN All Rights Reserved.
IstoKathan- ইষ্টকথন > Blog > শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গ > শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রা ‘র পূর্বাপর- দীপক কুমার দত্ত
শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গসদালোচনা ও বিশ্লেষণ

শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রা ‘র পূর্বাপর- দীপক কুমার দত্ত

test
Last updated: 2021/02/21 at 5:10 AM
test
Share
14 Min Read
Istokathan -Sree Sree Thakur
SHARE

শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রা ‘র পূর্বাপর

লেখক: দীপক কুমার দত্ত


 

Contents
শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রা ‘র পূর্বাপরলেখক: দীপক কুমার দত্তCurrently Reading:Read More On IstoKathan:Stay Connected with ISTOKATHANFaceBook  YouTube  Linkedin   Instagram  Pinterest  Twitter  Email Us
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মহা অন্তর্ধানের ৪ দিন পূর্ব্বে ২৩-শে জানুয়ারী থেকে ২৬-শে জানুয়ারি (১৯৬৯) পর্যন্ত ঠাকুরকে যেভাবে দেখেছিলাম, তাঁর সম্পর্কে যে ধারণা ও ভাবনা জেগেছিল, মহাপ্রয়াণের পর ২৭-শে জানুয়ারী কলকাতায় আমার যেটুকু ভূমিকা ছিল এবং ২৫-শে মে কলকাতায় অপরাহ্ণে অসংখ‍্য সৎসঙ্গী ও ভক্তপ্রাণ মানুষের যে শোকমিছিল কলকাতার বুকে বিপুল আলোড়ন তুলেছিল সে সম্পর্কে আমার কিঞ্চিৎ উপলব্ধি সবিনয়ে এই নিবন্ধে তুলে ধরতে চেষ্টা করছি।
অসাবধানবশতঃ বা অনিচ্ছাকৃত যদি কিছু ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে, তার জন্য লেখার পূর্ব্বেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
-দীপক কুমার দত্ত 
শ্রীশ্রীঠাকুরের
“রেখে গেল বাণী সেযে অভয় অশোক —
জয় হোক্, জয় হোক্, তারি জয় হোক্।”
                                                  -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পরমপ্রেমময় পুরুষোত্তমম্ শ্রীশ্রীঠাকুর যিনি আমাদের কাছে আদর্শ পুরুষ, জীবজগৎ-রূপে উদ্ভাসিত অদ্বিতীয় আমান ঈশ্বর –তাঁর দিব‍্য মর্ত‍্য-তনু আজ আমাদের সামনে নেই। তিনি দেহ রেখেছেন। তাঁর সনাতন রূপাতীত রূপ রয়ে গেছে বিশ্বজনের সামনে। কবির ভাষায় বলা চলে: –
“নয়ন সমুখে তুমি নাই
নয়নের মাঝখানে নিয়াছ যে ঠাঁই।”
আন্তরিকতা নিয়ে অনুসন্ধিৎসু হলে দেখা যাবে তাঁর তত্ত্বদেহ আজো বিরাজিত চিরন্তন মহিমায়।
যাঁরা শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে চলার চেষ্টা করেন, তাঁদের মধ্যে এমন এক মানসিক শক্তি জেগে ওঠে, এমন এক আধ্যাত্মিক প্রেরণা কাজ করে যা তাঁদেরকে সময়ের দুরন্ত ঘূর্ণিপাকেও বাঁচা-বাড়ার পথে টেনে নিয়ে যেতে চায়। দুঃখে-শােকে, সংকটে-সমস্যায়, আঘাত-বাঁধা-বিপত্তিতে, রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসের মধ্যে দিয়ে তাঁরা চলার চেষ্টা করেন। তাঁর তত্ত্বদেহের সামনে নতজানু হয়ে তাঁরা শিখে নেন তাঁর নীতি-বিধির তাৎপর্যকে।
সর্বাবস্থায় আনন্দকে কিভাবে অধিগত করতে হয়, সত্য ও সুন্দরকে কিভাবে বরণ করে নিতে হয়, বিশ্বভূমিকে যুদ্ধক্ষেত্র বা কুরুক্ষেত্র ভেবে কিভাবে জীবন-সংগ্রাম করতে হয়, তা আমরা জেনেছি সেই বিরাট পুরুষের কাছে। মনে রাখতে হবে—দুঃখের রাত্রে নিখিলধরণী বঞ্চনা করলেও তাঁকে যেন আমরা সংশয়ের মধ্যে না রাখি। তাঁর অনন্তযাত্রার পরে তাঁর দিব্যজীবন ও বাণী অধিকতর গুরুত্ব নিয়ে প্রস্ফুটিত হােক।
এই প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রার পূর্বাপর (১৯৬৯খৃঃ-এর ২৩-শে জানুয়ারী অপরাহ্ন থেকে ২৭-শে জানুয়ারী রাত ১০টা পর্যন্ত) নিয়ে আমার যৎসামান্য অভিজ্ঞতা কৌতুহলী পাঠক-পাঠিকাদের কাছে অতি দীনভাবে এখানে তুলে ধরতে চাই।
আমি তখন “কলিকাতা বেলগাছিয়া মনােহর একাডেমির” –*সহকারী শিক্ষক।
স্কুলে “২৩-শে ও ২৬-শে জানুয়ারী” *সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের উপস্থিত থাকবার জন্য প্রধানশিক্ষক নির্দেশ দিয়েছেন। “আমি সবিনয়ে প্রধান শিক্ষককে ২৩-শে জানুয়ারী থেকে ২৬-শে জানুয়ারী পর্যন্ত থাকতে পারব না জানালাম।” *বললাম—দেওঘরের ঠাকুর দর্শনে যাব। প্রধান শিক্ষক বাধা দিলেন না। ২২ তারিখে সন্ধ্যায় ট্রেনে চেপে ২৩ তারিখে দেওঘর পৌঁছালাম। ব্যাগ-ব্যাগেজ যথাস্থানে রেখে হাত মুখ ধুয়ে পার্লারে গিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরকে প্রণাম নিবেদন করে বসে পড়লাম। আশে-পাশে অনেকেই বসে আছেন; কেউ কেউ দাঁড়িয়ে আছেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর আমার দিকে চেয়ে বললেন—কখন আলি ?
বললাম—এই কিছুক্ষণ হল।
এদিক ওদিক চেয়ে ঠাকুর কি যেন দেখলেন। হঠাৎ কেমন এক করুণ চোখে আমার দিকে চেয়ে বললেন, “আমার মা কোথায় রে? মাকে দেখেছিস? কি আশ্চর্য! ব্যথাহরণকারীর সজল আঁখি—যেখান থেকে যেন ঝরে পড়ছে কি এক ধরনের বেদনার ভাব! আমার বুকের ভেতরটা এক অজানা আশঙ্কায় মােচড় দিয়ে উঠল।
আরাে দু-একজন ভক্তকেও ঐ একই প্রশ্ন একই ভাবে করলেন। সবাই নিস্তব্ধ। কারাে মুখে রা নেই। আমার মনে হল—তাঁর ঐ প্রশ্ন চেতনার গভীরতম প্রদেশ থেকে উঠে এসে আমাদের সবাইকে সতর্ক ও সজাগ করে তুলতে চাইছে। আমাদের ঘুমন্ত বিবেককে হয়তাে ঐ প্রশ্নের খোঁচায় জাগিয়ে তুলতে চাইছেন—যাতে আমরা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে তৎপর হতে পারি। তাঁর ভাব-ভাবনার অন্তর্গত অন্তবীজ যেন প্রকাশ পাচ্ছে তাঁর ঐ অশ্রুময় কথায়।
শ্রীশ্রীঠাকুরের ঐ প্রশ্ন আমার মনে অনুরণন তুলে দুটি উত্তরের সামনে আমাকে দাঁড় করিয়ে দেয়। –মাতৃশক্তির জাগরণ না ঘটলে আশ্রম জীবনে বা সৎসঙ্গ জগতে যথার্থ ছন্দ আসতে পারে না। সুখ-শান্তি, সৌন্দর্য, প্রাচুর্য্যের বিকাশ নির্ভর করে মাতৃশক্তির জাগরণের উপর। কবি বলেছেন—’না জাগিলে ভারত-ললনা/এ ভারত আর জাগে না জাগে না।’ –শ্রীশ্রীঠাকুর ঐ প্রশ্নের দ্বারা মাতৃশক্তির সঠিক জাগরণের ব্যাপারে সৎসঙ্গীদের সচেতন হতে বলেছেন।
*দ্বিতীয় যে উত্তরটি আমার মনে জেগে উঠল সেটি হল
শ্রীশ্রীঠাকুরের মাতার অসাধারণ কর্মনিষ্ঠা এবং সংসার সমাজ ও সৎসঙ্গ পরিচালনার সুনিপুণ দক্ষতা।জননীদেবীই ছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের অপূর্ব অফুরন্ত কর্ম প্রস্রবণের মূল উৎস। আমরা জানি —-শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রেমময় চরিত্র, সর্বব‍্যাপী সেবা -বোধ, উদ্দাম কর্মোদ্দীপনা, মানবজীবন ও বিশ্বপরিস্থিতির নানাবিধ সমস্যা ও সংকটের সমাধানের প্রয়াস, সাহিত্য ও সংস্কৃতি-সংস্কৃতির উদ্দীপনা শক্তি যত কিছু লীলা সবই মাকে কেন্দ্র করে সার্থকতার পথে এগিয়ে গিয়েছে।
তাঁর মায়ের মত এমন দশভূজা রূপ তিনি আর কোনো নারীর মধ্যে প্রত্যক্ষ করেননি বলেই হয়তো অমন মর্মবিদারী প্রশ্ন আমাদের কাছে রেখেছেন। ভগবতী সদৃশা জননীর কাছে বিশ্বজগৎ ত‍্যাগ করে চলে যাবার ইঙ্গিতও এই প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে ছিল বলেই আমার ধারণা।
পূজ্যপাদ ছােড়দার সাথে কিছু প্রয়ােজনীয় কথাবার্তা ছিল আমার। তিনি(শ্রীবিবেকরঞ্জন চক্রবর্তী) বিশেষ প্রয়ােজনে কলকাতা চলে যাওয়ায় তাঁর সাক্ষাৎ পেলাম না। তাঁর নির্দেশ ছিল—দেওঘর এলেই যেন তাঁর সাথে দেখা করি। দেখা না হওয়ায় একটু হতাশই হলাম।
সৎসঙ্গের কিছু কিছু প্রীতিভাজন ও শ্রদ্ধাভাজন পরিচিত গুরুভ্রাতাদের থেকে সাথে সাক্ষাৎ করি। এই জাতীয় ব‍্যস্ততার মধ্যে মাঝে মাঝে মনটা উতলা হয়ে উঠতে থাকে পরম প্রেমময় ঐ একটি অর্থবহ প্রশ্ন কে ঘিরে। কারাের সাথে এ বিষয়ে আলােচনা করতেও সাহস হয় না। সকাল-বিকাল ঠাকুরের কাছে উপস্থিত থাকি। তাঁর সামনে গেলেই মনে হত—একটা অব্যক্ত অচঞ্চল বিষন্নতা যেন তাঁর সর্বাঙ্গ থেকে ঝরে পড়ছে।
তাঁর একটি বাণী মনের মধ্যে জেগে উঠতে থাকে—
“আমার কথাগুলি যদি তােমার
শুধু কথা ও চিন্তারই খােরাকমাত্র হয়
করার বা আচরণের ভেতর দিয়ে
সেগুলিকে যদি
বাস্তবেই ফুটিয়ে তুলতে না পার
তবে ——
পাওয়া তােমার তমসাচ্ছন্নই রয়ে যাবে —–
তা কিন্তু নিশ্চয়।”
২৬-শে জানুয়ারীর সকাল। আজ কলকাতা ফিরতে হবে। শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে অনুমতি নিয়ে যাত্রা করতে হবে। আমি অপেক্ষা করে আছি। আশ্রম থেকে মাইল দশেক দূরে ডিগরিয়া পাহাড়ের পাশে মানিকপুর গ্রাম। প্রতিদিনের নিয়মমত সকালে গাড়িতে সেখানে গিয়েছেন শ্রীশ্রীঠাকুর। সঙ্গে গিয়েছে আরও ৭/৮টি গাড়ি।
প্রাকৃতিক পরিবেশে বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়ে প্রকৃতির শান্ত স্নিগ্ধ সুন্দররূপ শেষবারের মতাে উপভােগ করে সবাইকে নিয়ে ফিরে এলেন আশ্ৰমভূমিতে। পূজ্যপাদ বড়দা পালারের পাশে যে ঘরটায় বসেন, সেখানে একটা নতুন চৌকি আনা হয়েছে। তার উপরে পাতা শ্বেতশুভ্র শয‍্যা। ঠাকুরকে সেই চৌকির ধরে এনে বসানো হল। অন্য দিনের মতো ঠাকুরের চোখেমুখে একটা অব্যক্ত বিষন্নতা।
কিছুক্ষণ স্তব্ধতা। *আমি একটু ইতঃস্তত করে বললাম। আমি আজ কলকাতা ফিরে যাচ্ছি। আপনার অনুমতি চাই। ঠাকুর অনুমতি দিলেন। এই মর্ত্যভূমিতে রক্তমাংসসঙ্কুল রূপে বিরাজিত দিব্যদেহী পুরুষকে শেষবারের মতাে প্রণাম নিবেদন করে করজোড়ে উঠে দাঁড়ালাম। ধীরে ধীরে আশ্রমপ্রাঙ্গণ ত্যাগ করে রাস্তায়এসে দাঁড়ালাম।
পরম মঙ্গলময় পুরুষের কাছে শীঘ্রই ফিরে আসবার বাসনা নিয়ে চলে এলাম কলকাতায়।
কলকাতায় ফিরে এলাম। এক ধরনের মনমরা ভাব আমাকে মাঝে মাঝেই অস্থির করে তুলতে লাগল। স্কুল শেষ হলেই সৎসঙ্গ মন্দিরে যাব। স্কুল থেকে বেরিয়ে বিধান সরণি ও গ্রে স্ট্রীটের মিলনস্থলে দেখা হয়ে গেল গুরুভ্রাতা ‘সাহিত্যিক হরিপদ ঘোষ’দার সাথে।
তাঁর কাছেই জানলাম ——-
পরম প্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর ইহলোক ছেড়ে চলে গেছেন অনন্তযাত্রায়—মহাপ্রয়াণের পথে ২৭-শে জানুয়ারী(১৯৬৯) ভাের ৪-টা ৫৫-মিনিটে (বাংলা ১৩৭৫ সালের ১২-ই মাঘ)।।
satyanusaran
কয়েক মুহুর্ত বজ্রাহতের মতাে দাঁড়িয়ে রইলাম। তারপর পড়ি-মরি ছুটলাম ৬৮নং মির্জাপুর স্ট্রিট (বর্তমানে সূর্যসেন স্ট্রীট) সৎসঙ্গ ভবনে। সেখানে দোতলা এক অফিস ঘরে আছেন মধ্যবয়স্ক গুরুভ্রাতা (Food & Supply বিভাগের একজন Sub-Inspec-tor)। দুর্ভাগ্যবশতঃ সেই ইষ্টপ্রাণ গুরুভ্রাতার নামটি ভূলে গেছি।
শ্রীশ্রীঠাকুরের মহাপ্রয়াণের পর এই সংকট-কালিন অবস্থায় সৎসঙ্গী হিসেবে আমাদের করণীয় কি–সে সম্বন্ধে আমরা দুজন আমাদের মতাে করে আলােচনা করলাম। ফোনে যােগাযােগ করলাম — ‘আকাশবাণী’র সঙ্গে। তাঁরা জানালেন—”খবর পেয়েছি। সন্ধ্যায় রেডিও-তে খবর প্রচারিত হবে।” তাঁর তিরােধানের কথা ‘রেডিও’ মারফৎ ছড়িয়ে পড়ে দেশের নানা প্রান্তে।
আমি দ্রুত শ্রীশ্রীঠাকুরের তিরােধান ও জীবনেরকিছু উল্লেখযােগ্য ঘটনা নিয়ে নীতিদীর্ঘ একটি ‘রিপাের্ট’ তৈরী করলাম। আমি ও সেই দাদা ৮/১০টা কপি তৈরী করে একটা ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম “সংবাদপত্র-গুলাের কার্যালয়ে”। *
দৈনিক বসুমতী, *যুগান্তর, *Amrita Bazar পত্রিকা, *স্টেটসম্যান, *আনন্দবাজার পত্রিকা, Hindusthan Standard অফিসে গিয়ে রিপাের্টের সাথে শ্রীশ্রীঠাকুরের ছবি দিয়ে আসি। পত্রিকার নিউজ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মীদের কেউ। কেউ বললেন—”আপনাদের রিপাের্ট ও ঠাকুরের ছবি পেয়ে আমাদের কাজের সুবিধা হল”। ‘সন্মার্গ’ ও আরাে ২/১টা অন্যভাষায় পত্রিকার সাথে যােগাযােগ করলাম।
অনতিক্রম্য শােক ও সন্তাপের মধ্যেও কিছুটা নিশ্চিন্ত হলাম এই স্বতঃদায়িত্ব পালন করে।
রাত দশটায় দাদাটি চলে গেলেন। আমিও ফিরে এলাম আমার অস্থায়ী ডেরায়। বেদনা-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সারা রাত কেটে গেল। ঘুম হল না। সকালে উঠেই বিভিন্ন ‘সংবাদপত্র’ সংগ্রহ করলাম। “বাংলা ও ইংরেজি সংবাদপত্রে ঠাকুরের তিরােধানের খবর প্রকাশিত হয়েছে।” কোনাে কোনাে সংবাদপত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে।
“যুগান্তর, দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় আমার দেওয়া রিপাের্টকে প্রাধান্য দিয়ে আরাে কিছু সংযােজিত হয়েছে।” কোনাে কোনাে সংবাদপত্র কয়েকদিন ধরে মহাজীবনের মহাপ্রস্থান ও সেই জীবনের লীলাকথা প্রকাশিত হয়েছে।
শ্রীশ্রীবালানন্দ আশ্রমের পণ্ডিত ও আচার্যদের পরামর্শক্রমে শ্রীশ্রীঠাকুরের পারলৌকিক ক্রিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ দানসাগর-মহাতােরণ বৃষােৎসর্গ শ্রাদ্ধ যথাবিধি আয়ােজন ও নৈষ্ঠিক তৎপরতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। মহাপ্রয়াণের দ্বাদশ দিনে *(৬ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯) সাড়ম্বরে মহাপ্রসাদের আয়ােজন করা হয় আনন্দবাজার প্রাঙ্গণে। প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পরিতৃপ্তির সঙ্গে প্রসাদ গ্রহণ করেন।
যথাবিহিত মর্যাদায় শ্রীশ্রীঠাকুরের পূত নাভিমূল, অস্থি ও ভষ্ম *বারানসী, *প্রয়াগ ও *হরিদ্বারে বিসর্জনের পর, *কলকাতার গঙ্গায় পবিত্র ভষ্মধার বিসর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। *২৫শে মে (১৯৬৯) এক ঐতিহাসিক পথ পরিক্রমা শুরু হয় অপরাহ্ন ৪ ঘটিকায়। ৬৭, যতীন্দ্রমােহন এভিনিউ-এর ষােড়শী ভবন থেকে শুরু হয় শােভাযাত্রা। প্রায় এক লক্ষ মানুষ এই পথ পরিক্রমায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুরের ভষ্মধারটি ছিল এক সুসজ্জিত মন্দির সদৃশ ট্যাবলােয়। জয়ঢ়াক, খােল-করতাল, ঢােল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র নিয়ে উদাত্ত কীর্তনসহ শােভাযাত্রা কলকাতার বিভিন্ন রাজপথ দিয়ে এগিয়ে চলে। *এই জনস্রোত কলকাতায় অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছিল। মুগ্ধ বিস্ময়ে কলকাতার মানুষ অবলােকন করেছিল এক মহতী পথ-পরিক্রমা। এই দৃশ্য অসংখ্য মানুষের হৃদয়কে শ্রদ্ধায় ভক্তিতে বিগলিত করে তুলেছিল। পথ পরিক্রমার কথা উল্লেখ করলাম বটে, কিন্তু এই ঐতিহাসিক দৃশ্যের যথাযথ বিবরণ দেওয়া আমার পক্ষে দুঃসাধ্য।
বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ জ্যোতির্ময় আদর্শ পুরুষ, কোটি কোটি মানুষের উপাস্য, দিব্য চেতনায় সমুদ্ভাসিত মহামানব, এ যুগের মহাঅবতার পরম প্রেমময় পুরুষােত্তমম্ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র তাঁর সমুজ্জ্বল মানবলীলা সংবরণ করে অনন্ত অমৃতের পথে অন্তর্হিত হলেন। সবর্জনের সামনে রেখে গেলেন তাঁর লীলায়িত জীবনের সুবিনায়িত কল্যাণকর ভাবধারা—যা শত শত বৎসর ধরে মানুষকে পথ দেখাবে, মানুষকে পরিচালিত করবে ধারণ-পালন-সম্বেগসিদ্ধ ব্যক্তিত্বে আরূহ হওয়ার দিকে। সেই অনন্ত পুরুষ যুগ যুগ ধরে ধর্মের পূত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে যাবেন। তিনি ব্যাপ্ত হয়ে আছেন চরাচরে। মহাজীবনের সাথে জীবনের যােগ সাধনের প্রেরণা প্রতিনিয়ত সঞ্চারিত করে যাবেন।
রবীন্দ্রনাথের “চিত্রা” –কাব্যগ্রন্থের “মৃত্যুর পরে” কবিতায় এই সত্যটিই ফুটে উঠেছে অনুপম ভঙ্গীতে –
“উঠিতেছে চরাচরে অনাদি অনন্ত স্বরে
সংগীত উদার।
সে নিত্য গানের সনে মিশাইয়া লহো মনে
জীবন তাহার।
ব্যাপিয়া সমস্ত বিশ্বে দেখাে তারে সর্বদৃশ্যে
বৃহৎ করিয়া।”
যুগ-পুরুষােত্তমমে্র অমােঘ বিধান—তাঁকে অবলম্বন করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সংশয়ে-সঙ্কোচে, আপদে-বিপদে, সংকটে-সন্ত্রাসে যেন পথভ্রষ্ট না হই। কলির অশুভ ইঙ্গিতে বিপন্ন বিস্ময় ও দিশাহীনতা যেন আমাদের গ্রাস না করে।
মহর্ষি ব্যাসদেব তাঁর জন্মযােগী পুত্র শুকদেবকে ভারত-ভাগবত কথার গুরুত্ব বুঝিয়ে সবশেষে বলেছিলেন ——
“ন জাত কামান্ন ভয়ান্ন লােভাদ্ধৰ্মং
ত্যজেজ্জীবিতস্যাপি হেতােঃ।”
কামনাসিদ্ধির কারণে, ভয়ে বা লােভে প্রাণ বিপন্ন হলেও কখনাে ধর্মকে ত্যাগ করবে না। কারণ ধর্ম নিত্য এবং ধর্মের যিনি রূপকার, তিনি সর্বাবস্থায় সর্বজনের আদর্শ ও উপাস্য। শুকদেবকে প্রদত্ত মহর্ষি ব্যাসদেবের উক্তি আমাদের সমগ্র সত্তা দিয়ে গ্রহণ করলেই আসবে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি।
মহর্ষি অন্যত্র আর একটি অমোঘ সত্য প্রকাশ করেছেন —যত ধরনের প্রায়শ্চিত্ত আছে, তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল নিঃশর্তে নিঃসংকোচে পুরুষোত্তমম্-কে আশ্রয় করা চলে। কারণ তিনিই প্রায়শ্চিত্তকারীকে ত্রান করেন, তার সার্বিক মঙ্গলের সুব্যবস্থা করেন। তিনিই মঙ্গলকারক, পাবক পুরুষ।
পুরুষােত্তম শ্রীশ্রীঠাকুরের মহাঅন্তর্ধান ঘটলেও আজো তিনি সৃষ্টির মাহাত্ম্যে, প্রবহমান বাণীর মধ্যে দীপ্যমান। আজো তিনি অনুসরণীয়।
যতদিন না তাঁর মানবরূপে আবির্ভাব না ঘটে, ততদিন তিনি আমাদের পরম ত্রাতা, আমাদের নিত্য স্মরণীয় ও উপাস্য। তিনিই আমাদের শক্তি, তিনিই আমাদের চেতনা। নিখিল ব্যাপ্ত করে যে ঘর রচনা করে গেলেন, যে দিব্য আলােক বিকিরণ করে গেলেন, যে প্রেম অকাতরে বিলিয়ে গেলেন—”জয় হােক্, জয় হােক্, তারি জয় হােক”।
________________________________
তথ্যসূত্র:- প্তার্চ্চি /পঞ্চম বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / পৌষ:-১৪১৯ / জানুয়ারী:-২০১৩]

Currently Reading:

শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রার পূর্বাপর- দীপক কুমার দত্ত

Read More On IstoKathan:

সরস্বতী দেবীর পূজা সম্বন্ধে শ্রীশ্রীঠাকুর

কিভাবে কথা বলতে হয়’ -উত্তরে শ্রীঠাকুর

সক্রেটিসের ফর্ম্মুল’ নিয়ে আলোচনা- বড়দা ও শ্রীশ্রীঠাকুর

পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা সম্পর্কে পরামদয়াল শ্রীশ্রীঠাকুরের কতিপয় উক্তি



 

Stay Connected with ISTOKATHAN

FaceBook  YouTube  Linkedin   Instagram  Pinterest  Twitter  Email Us



 

You Might Also Like

একুশে বই মেলা’য় সৎসঙ্গের স্টল-শ্রীশ্রীঠাকুরের বানী ও আদর্শে মুগ্ধ পাঠকের ভিড়!

সরস্বতী দেবীর পূজা সম্বন্ধে শ্রীশ্রীঠাকুর

পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা সম্পর্কে পরামদয়াল শ্রীশ্রীঠাকুরের কতিপয় উক্তি

দীক্ষা সংকল্প ও ইষ্টটান সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর

সক্রেটিসের ফর্ম্মুল’ নিয়ে আলোচনা- বড়দা ও শ্রীশ্রীঠাকুর

TAGGED: sree sree thakur, sree sree thakur and satsang, দীপক কুমার দত্ত, পুরুষােত্তম শ্রীশ্রীঠাকুরের মহাঅন্তর্ধান, শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র, শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গ, শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্তযাত্রার পূর্বাপর, শ্রীশ্রীঠাকুরের তিরােধান, সদালোচনা ও বিশ্লেষণ

Sign Up For Daily Newsletter

Be keep up! Get the latest breaking news delivered straight to your inbox.

By signing up, you agree to our Terms of Use and acknowledge the data practices in our Privacy Policy. You may unsubscribe at any time.
test February 21, 2021 February 21, 2021
Share This Article
Facebook Twitter Copy Link Print
Share
Previous Article সরস্বতী দেবীর পূজা সম্বন্ধে শ্রীশ্রীঠাকুর সরস্বতী দেবীর পূজা সম্বন্ধে শ্রীশ্রীঠাকুর
Next Article অমর একুশে বই মেলাইয় সৎসঙ্গের স্টল একুশে বই মেলা’য় সৎসঙ্গের স্টল-শ্রীশ্রীঠাকুরের বানী ও আদর্শে মুগ্ধ পাঠকের ভিড়!
Leave a comment Leave a comment

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Stay Connected

235.3k Followers Like
69.1k Followers Follow
11.6k Followers Pin
56.4k Followers Follow
136k Subscribers Subscribe
4.4k Followers Follow
- Advertisement -

Latest News

0x1c8c5b6a
Uncategorized April 13, 2025
0x1c8c5b6a
Uncategorized April 13, 2025
Tron: Ares 2025 HDRip Dow𝚗load To𝚛rent
MOVIEBLOG March 20, 2025
Les Musiciens 2025 Must-see Films Magnet
MOVIEBLOG March 20, 2025

About Sree Sree Thakur

Sree Sree Thakur Anukulchandra The Yuga Purushottam was born on 14 September 1888 in Himaitpur village in the Pabna district of the eastern zone of Bengal in undivided India, now in Bangladesh. His father was Shibchandra Chakravarty (Shandilya Gotra Kanyakubja Brahmin) and his mother was Manmohini Devi.

Quick Link

  • সুন্দর ব্যবহার
  • ধর্ম ও মানবতা
  • বইসমুহ
  • নিষ্ঠা ও আদর্শ
  • পরিবার ও সমাজ গঠন
  • ধর্ম ও মানবতা

Top Categories

  • Home
  • Our Blog
  • Contact For Blogging
  • About Our Blogs
  • Category

Sign Up for Our Newsletter

Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!

IstoKathan- ইষ্টকথনIstoKathan- ইষ্টকথন
Follow US
© 2023 ISTOKATHAN All Rights Reserved.

  • গ্রন্থ আলোচনা


  • গ্রন্থ আলোচনা

Istokathan -Sree Sree Thakur
JOYGURU! Join Us!

Subscribe to our newsletter and never miss our latest news, podcasts etc..

Zero spam, Unsubscribe at any time.
adbanner
AdBlock Detected
Our site is an advertising supported site. Please whitelist to support our site.
Okay, I'll Whitelist
istokathan istokathan
Welcome Back!

Sign in to your account

Register Lost your password?